জলজ মানুষ
-সুমিত মোদক
তোকে তো বলে ছিলাম ,
এভাবে ভেঙে দিওনা জীবনের বাঁধ ;
বাঁধ ভেঙে গেলে ভেসে যাবে সব কিছু, সব…
তুই তো কথা শুনলেই না;
নদীর কাছে বসে নিশ্চিন্তে প্রেম করা যায়;
ঘর বাঁধা যায় না;
যে কোনো মুহূর্তে ভেসে যেতে পারে নরম স্বপ্নগুলো;
কনেদেখা আলোতে প্রজাপতির ডানায় ভর দিয়ে
উড়ে যাওয়া যায় মনের আনন্দে;
দেখে নেওয়া যায় কিভাবে বদলে যাচ্ছে রঙবেরঙের ডানা,
সময় …
যে সময়টা হাতের মধ্যে ধরে রাখতে চেয়েছিলিস,
সে সময়টুকু অসময়ের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে;
তার ফলেই বদলে গেছে দিনলিপি;
ধীরে ধীরে ঘিরে ধরেছে একের পর এক অসুখ;
সুখ পাখিটা নিরুদ্দেশের পথে;
জলজ শিকড় আজ ভাসতে ভাসতে এসে ঠেকেছে
ভাঙা বাঁধের কাছে;
যেখানেই খেলে বেড়ায় স্রোত, ভবিষ্যৎ, জলজ চাঁদ;
মনে আছে কি প্রথম দিনের প্রথম কথপোকথন!
মনে আছে কি ভেঙে পড়া বাঁধের শব্দ!
মনে আছে কি!
এতটাই জল জমে আছে যে,
কোনও রকম ভাবেই খুঁজে পাওয়া যায় না ভূমি;
যে ভূমিতে দুটো পা শক্ত করে দাঁড়ানো যায়;
অধিকারের কথা বলা যায়;
সর্বোপরি বাঁচা যায় নিজের মতো করে;
দিনের পর দিন জলে ভাসতে ভাসতে কখন যে
জলজ মানুষ হয়ে গেছিস,
বুঝতে পারলি না;
কেবলমাত্র শ্যাওলার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার;
কনেদেখা আলো এখন গভীর অন্ধকার;
যদিও কোনও মতে দেখা পাওয়া যায় না সপ্তর্ষিমণ্ডল;
আকাশ পথে ছুটে যায় ছায়া পথ;
চারিদিকে ভেসে বেড়ায় হাজার হাজার অস্পষ্ট শব্দ;
যে শব্দ দিয়ে তৈরি হয় অলীক মানুষ এক;
যে কিনা তোকে রেখে দিয়েছে তার অধীনে;
আজ মুক্তি পাওয়া জন্য ছটফট করলে কি হবে;
সময় তো লাগবে;
নতুন করে বাঁধ বাঁধতে হবে এ জলজ জীবনে।
খুব ভালো লাগলো পড়ে
খুব সুন্দর